প্রেমের ফাঁদে ফেলে অপহরণ আটক পাঁচ

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ফতুল্লার ভূঁইগড় পূর্বপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে চার নারীসহ পাঁচজনকে আটক করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) ১১।

প্রেমের ফাঁদে ফেলে অপহরণের অভিযোগে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লা থেকে পাঁচজনকে আটক করা হয়।

আটক ব্যক্তিরা হলেন শিউলী বেগম, তাঁর সহযোগী নাসিমা আক্তার, নাসিমা বেগম, মোমতাজ বেগম ও মো. জসিম মিয়া। আটকের পর অপহৃত দুই ব্যবসায়ীর কাছ থেকে নেওয়া মুক্তিপণের প্রায় ৮০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
Read More News

অপহরণের শিকার দুজন হলেন কুমিল্লার ইলিয়টগঞ্জ এলাকার হুমায়ুন আহমেদ ও দাউদকান্দি থানার গৌরীপুর এলাকার শাহজালাল। তাঁরা দুজনই কম্পিউটার অ্যাকসেসরিজ ব্যবসায়ী।

কামরুল হাসান আরো জানান, ১৭ জুলাই সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকা থেকে মুঠোফোনে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অপহরণকারী শিউলী বেগম ও তাঁর সহযোগী নাসিমা আক্তার কুমিল্লার দুই ব্যবসায়ী হুমায়ুন আহমেদ ও শাহজালালকে ফতুল্লার ভূঁইগড় পূর্বপাড়া এলাকায় মমতাজ বেগম নামের এক নারীর বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে তাঁদের দ্বিতীয় তলায় নির্দিষ্ট কক্ষে নিয়ে আটকে রাখা হয়। পরে তারা দুজনকে হত্যার হুমকি দিয়ে ওই বাসায় অবস্থানরত মেয়েদের সঙ্গে জোরপূর্বক মুঠোফোনে আপত্তিকর ছবি তোলে এবং ভিডিও করে। ওই ছবি ইন্টারনেটে প্রকাশ করবে বলে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে অপহরণকারীরা।

এ ছাড়া মুক্তিপণ বাবদ ব্যবসায়ী মো. হুমায়ুন আহমেদের ব্যবহৃত মুঠোফোন দিয়ে অপর ব্যবসায়ী মো. শাহজালালের স্ত্রীর মুঠোফোনে কল করে ০১৬৭৪০৮৭১৬৬, ০১৬৮৯১৯২০১৬ এবং ০১৭৬২৬৮৭৫২৩ মুঠোফোন নম্বরে তিন লাখ টাকা বিকাশ করতে বলে। ওই বিকাশ নম্বরগুলোতে বিভিন্ন মুঠোফোন থেকে অপহৃতের পরিবার তিন লাখ টাকা পরিশোধ করার পরও অপহরণকারীরা তাদের মুক্তি দিতে অস্বীকৃতি জানায় এবং আরো তিন লাখ টাকা দাবি করে।

র‍্যাব কর্মকর্তা আরো জানান, অপহৃত শাহজালালের কাছ থেকে জোরপূর্বক সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের এটিএম কার্ড ও পিন নম্বর নিয়ে সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্ট থেকে দুদিনে আলাদাভাবে এক লাখ টাকা করে দুই লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়।

এদিকে, ব্যবসায়ী হুমায়ুন আহমেদকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না মর্মে তাঁর পরিবার ১৭ জুলাই রাজধানীর রমনা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরে তাঁর ব্যবসায়িক অংশীদার মো. জসিম উদ্দিন ১৮ জুলাই র‌্যাব-১১-এর কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

ওই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে র‌্যাব-১১-এর সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আলাউদ্দিনের নেতৃত্বে একটি দল অপহরণকারীদের বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করে সদর উপজেলার ফতুল্লার ভূঁইগড় পূর্বপাড়া এলাকায় অভিযান চালায়। ওই সময় অপহরণকারী চক্রের মূল হোতা শিউলী বেগমসহ পাঁচ সদস্যকে আটক করা হয়। একই সঙ্গে অপহৃত দুই ব্যবসায়ীসহ মুক্তিপণের প্রায় ৮০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।

এ বিষয়ে ফতুল্লা থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *