হামলাকারীরা ৪ মাস ধরে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে

কিশোরগঞ্জের হামলাকারীরা ৪ মাস ধরে বিশেষ জঙ্গি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে। এ জন্য তারা বেছে নিয়েছিল গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় টিনের বেড়া দেওয়া একটি বাড়ি।

ওই বেড়ার মধ্যে টিনের তৈরি একটি ছোট্ট ঘরও ছিল। সেখানেই থাকত জঙ্গিরা। নানা ধরনের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে হামলা চালানোর মতো সক্ষমতা অর্জন করে তারা।

ঘটনার পর র‌্যাবের হাতে আটক জঙ্গি শফিউল ইসলাম ওরফে আবু মুকাতিনকে জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে এসেছে এসব তথ্য। এই জঙ্গি দিয়েছে গুরুত্বপূর্ণ নানা তথ্য।
Read More News

র‌্যাব সূত্র জানায়, শফিউল ইসলাম শোলাকিয়ায় হামলা চালানোর আগে অন্তত চারটি পৃথক হামলায় অংশ নেয়। এসব হামলায় ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষসহ চারজন নিহত হন। হত্যার শিকার হয়েছেন গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের তরুণ দত্ত, পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জের শ্রী শ্রী গৌরী মঠের অধ্যক্ষ জগেশ্বর রায়, কুড়িগ্রাম সদরের মুক্তিযোদ্ধা আলী হোসেন ও গাইবান্ধার হিন্দু ব্যবসায়ী দেবাশীষ।

এর মধ্যে চলতি বছর ২১ ফেব্রুয়ারি নিহত হন অধ্যক্ষ জগেশ্বর রায়। পুলিশ জানিয়েছে, এই হত্যার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার এজাহারভূক্ত আসামি শফিউল ইসলাম। এ ছাড়া তরুণ দত্ত ও দেবাশীষ হত্যার ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করা হয়।

একটি সূত্র জানায়, নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জেএমবির সদস্য শফিউল। তার দেওয়া তথ্যের সূত্র ধরে জঙ্গি নেটওয়ার্কের খোঁজ করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গোবিন্দগঞ্জের ওই বাসায় কতজন জঙ্গি প্রশিক্ষণ নেয় তার প্রকৃত সংখ্যা এখনই জানাতে চাইছে না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

এদিকে এই ঘটনায় ১০ দিনের রিমান্ডে থাকা অপর আসামি জাহিদুল হক ওরফে তানিম মানসিক ভারসাম্যহীন বলে দাবি করেছে তার পরিবার। তারা বলছে, এই কারণে বিয়ের মাত্র একদিনের মাথায় বউ তাকে ছেড়ে চলে যায়। জাহিদুলের বাবা আব্দুল সাত্তার জানান, তার ছেলে মানসিকভাবে অসুস্থ। প্রায় একই রকম তথ্য দিয়েছেন তার কয়েকজন প্রতিবেশীও।

তবে জাহিদুলের মানসিক অসুস্থতার বিষয়টি অস্বীকার করে কিশোরগঞ্জ থানার পরিদর্শক, তার কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ অনেক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। সময় হলে সব কিছু প্রকাশ করা হবে।

তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, হামলায় অংশ নেওয়া একজনকে খুঁজছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। তাকে ধরতে দেশের সব জেলায় বিশেষ বার্তা পাঠিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। হামলাকারীদের লক্ষ্য ছিল ঈদ জামাতে ব্যাপক আতঙ্ক তৈরি করা। যাতে পদদলিত হয়ে অনেক মানুষ নিহত হয়। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতার কারণে ভেস্তে যায় জঙ্গিদের সেই পরিকল্পনা।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *