ক্ষমতাসীন সরকারকে অবৈধ ও দুর্বল আখ্যা দিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই আওয়ামী লীগ দেশকে অন্যের হাতে তুলে দেয়ার ষড়যন্ত্র লিপ্ত রয়েছে। এ জন্য বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের বদলে, পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। পুলিশের মন মতো সব কিছু চলছে। তারা যাকে ইচ্ছা ধরে নিয়ে যাচ্ছে, ক্রসফায়ার দিচ্ছে, মহিলাদেরও নির্যাতন করছে। এসবের প্রতিবাদ করার কেউ নেই। প্রতিবাদ করলে তাদেরকে জেল-জুলুম, অত্যাচার সহ্য করতে হয়। দেশের বর্তমান পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে দেশের স্বার্বভৌমত্ব আছে কী না-সেই প্রশ্নও তোলেন বিএনপি চেয়ারপারসন। এমতাবস্থায় দেশের নিরাপত্তা, স্বাধীনতা ও স্বার্বভৌমত্ব রক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহবান জানান খালেদা জিয়া। আজ বুধবার সন্ধ্যায় রমজানের ১৬ তম দিনে ডক্টর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) ইফতার মাহফিলে অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব বলেন বিএনপি চেয়ারপারসন। রাজধানীর ইস্কাটনে লেডিস ক্লাবে এই ইফতার মাহফিল হয়। বেগম খালেদা জিয়া বলেন, আজ জনগণ শঙ্কিত, দেশে স্বার্বভৌমত্ব আছে কী না? কারণ দেশের মানুষ আজ নির্ভয়ে কোনো কাজ করতে পারেনা। অবৈধ, অনির্বাচিত সরকার আজকে দেশ পরিচালনার নামে দেশকে বোধ হয় অন্যের হাতে তুলে দেওয়ার ষড়যন্ত্রে ব্যস্ত। সেই ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে পারে শুধু দেশের মানুষ। এই সরকার ক্ষমতার আসার পর থেকেই দেশকে অন্যের হাতে তুলে দেয়ার জন্য কাজ করছে। সেজন্য বিডিআর হত্যাকাণ্ড দিয়ে এর সূত্রপাত করেছে। এখন খুন-গুম করে অবস্থা নিয়ন্ত্রণে রাখবে। তিনি বলেন, তৎকালীর বিডিআর (বর্তমান বিজিবি) হত্যাকাণ্ডের পর এই বাহিনীর মনোবল দুর্বল হয়ে গেছে। এজন্য সীমান্তে মানুষকে রক্ষা করতে পারছেনা তারা। সীমান্তে থেকে দেশের মানুষকে রক্ষা করতে পারছে না। আজ ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ এবং মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি সীমান্তের ভেতরে ঢুকে মানুষ মেরে যাচ্ছে। তারা (সরকার) একটিরও কোনো প্রতিবাদ করতে পারে না। বাংলাদেশ আজ কোনো অবস্থায় চলে গেছে যে, মিয়ানমার পর্যন্ত হেলিকপ্টার দিয়ে আকাশ সীমা লঙ্ঘন করে। বিজিবি আজ কিছু করতে পারছে না। কারণ নিজেদের দেশের মানুষ হত্যা করে তারা দুর্বল হয়ে গেছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে দুর্বল শক্তির সরকার আখ্যা দিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, এই সরকার দিয়ে মানুষের কল্যাণ হতে পারে না। বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের বদলে, পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। পুলিশের মন মতো সব কিছু চলছে। তারা যাকে ইচ্ছা ধরে নিয়ে যাচ্ছে, ক্রসফায়ার দিচ্ছে, মহিলাদেরও নির্যাতন করছে। এসবের প্রতিবাদ করার কেউ নেই। প্রতিবাদ করলে তাদেরকে জেল-জুলুম, অত্যাচার সহ্য করতে হয়। তিনি বলেন, দেশের আইন-আদালত, বিচারালয় কোনোটাই নিরাপদভাবে কাজ করছে না। দেশের মানুষ আজ অত্যাচারিত নির্যাতিত। এমতাবস্থায় দেশের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা স্বার্বভৌমত্ব রক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহবান জানান খালেদা জিয়া। ড্যাবের সভাপতি ডা. আজিজুল হকের সভাপতিত্বে খালেদা জিয়ার সাথে মূল মঞ্চে ইফতার মাহফিলে যোগ দেন-বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান চোধুরী কামাল ইবনে ইউসূফ, সেলিমা রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. খন্দকার মোস্তাহিদুর রহমান, ডা. এম এ মান্নান মিয়া, ডা. আবদুল মবিন খান, ডা. তোফায়েল আহমেদ, পেশাজীবী নেতা রুহুল আমীন গাজী, অর্থনীতিবিদ ড. মাহবুব উল্লাহ, সিনিয়র সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ, শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের সভাপতি অধ্যক্ষ মো: সেলিম ভুঁইয়া প্রমুখ। ড্যাব মহাসচিব ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এবং সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এস এম রফিকুল ইসলাম বাচ্চুর সঞ্চালনায় চিকিৎসকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক ভিসি অধ্যাপক ডা. এম এ তাহির, ড্যাব কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোস্তাক রহিম স্বপন, চট্টগ্রাম বিভাগের বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন, ড্যাবের যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আকরাম হোসেন, ডিএমসির সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মাহবুবুল আলম, বিএমএ’র সাবেক মহাসচিব ডা. গাজী আব্দুল হক, অধ্যাপক ডা. নুরুদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক ডা. আফতাব উদ্দিন, ড্যাবের সহসভাপতি মুক্তিযোদ্ধা ডা. আব্দুল কুদ্দুস, বিএসএমএমইউর দন্ত অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ডা. মতিউর রহমান মোল্লা, ড্যাবের সহসভাপতি অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, অধ্যাপক ডা. হারুনুর রশীদ, অধ্যাপক ডা. রফিকুল ইসলাম লাবু, ডা. প্রভাত চন্দ্র বিশ্বাস বাবু, ডা. মো. মাগফুর রহমানসহ ড্যাবের কেন্দ্রীয় ও সারাদেশের নেতৃবৃন্দ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। পেশাজীবীদের মধ্যে ইফতার মাহফিলে অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিধ্যালয়ের সাবেক প্রোভিসি অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, ড. সদরুল আমিন, ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, ড. আক্তার হোসেন খান, সাংবাদিক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, এম আবদুল্লাহ, ডা. তসলিম উদ্দিন, ডা. দেওয়ান মো: সালাহ উদ্দিন প্রমুখ। বিএনপি অন্যান্য নেতাদের মধ্যে ইফতার মাহফিলে যোগ দেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, মজিবুর রহমান সারোয়ার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খান, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ প্রমুখ।
Read More News