শেখ হাসিনা নামেই প্রধানমন্ত্রী : খালেদা জিয়া

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, শেখ হাসিনা কেবল নামেই প্রধানমন্ত্রী, তিনি পালন করেন অন্যের নির্দেশ।
রাজধানীর হোটেল পূর্বাণীতে গতকাল শনিবার ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরীক জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপা আয়োজিত ইফতার মহাফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
খালেদা জিয়া বলেন, ‘বাংলাদেশে আজকে তিনি যে বসে আছেন, তিনি কি দেশের প্রধানমন্ত্রী নাকি তিনি অন্য কোনো মন্ত্রী হিসেবে আছেন, সেটা বলা মুশকিল। আজকে দেশের মানুষ মনে করে তিনি প্রধানমন্ত্রী নন, তিনি নামে প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু তিনি অন্যের নির্দেশ পালন করেন। কাজেই তাকে প্রধানমন্ত্রী বলা যায় না।’
সাম্প্রতিক সময়ে ক্রসফায়ার ও বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে খালেদা জিয়া বলেন, প্রথমে অপরাধীদের ধরে জেলখানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর সেই অপরাধীদের রিমান্ড হয়। সেখান থেকে আর জেলখানা বা তাদের মা-বাবার কাছে তারা ফিরে যেতে পারে না। সে সোজা চলে যায় ক্রসফায়ারে। সে এমন কিছু তথ্য দিয়ে দেয়, যার ফলে দেখা যাবে সরকারই জড়িয়ে যাবে। সে জন্য তাকে তখন ক্রসফায়ারে দেয়া হয়। এই পবিত্র রমজান মাসেও এটি হচ্ছে।
তিনি বলেন, আজকে সরকার জোর করে মতায় বসে আছে, জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি তারা নয়।
বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেফতারের ওপর সম্প্রতি জারি হওয়া হাইকোর্টের নির্দেশনার কথা উল্লেখ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, আদালত নির্দেশ দিয়েছেন কাউকে বিনা ওয়ারেন্টে ধরতে পারবে না। সাদা পোশাকে লোকজন কেউ কিন্তু রাতের বেলা কাউকে গ্রেফতার করতে পারবে না। সেই নির্দেশও মানা হচ্ছে না। এরা আদালতের নির্দেশ পর্যন্ত মানে না। উল্টো তারা আদালতকে নির্দেশ দেয়, আদেশ দেয় যে তাদেরকে কী করতে হবে, কী করতে হবে না। এই হচ্ছে দেশের অবস্থা।
সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনিসহ বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডের কোনো আসামি ধরা পড়েনি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপি প্রধান বলেন, দেশে আজ কারো কোনো নিরাপত্তা নেই, কারো কোনো অধিকার নেই। বাংলাদেশের জন্য যে ল্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে আমরা যুদ্ধ করেছিলাম, মুক্তিযুদ্ধের সেই উদ্দেশ্য ও মুক্তিযুদ্ধের মূল ল্য আমাদের সামনে নেই। গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার, সকলের সমান অধিকার, মানুষের নিরাপত্তা কোনোটাই নেই।
দেশের বর্তমান অবস্থা থেকে উত্তরণে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান খালেদা জিয়া।
সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের পর জাগপার সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান, কেন্দ্রীয় সহসভাপতি আবু মোজাফ্ফর মো: আনার, সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুর রহমান খান, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আবদুল হালিম, ইসলামী ঐক্যজোটের অ্যাডভোকেট এম এ রকীব, খেলাফত মজলিসের সৈয়দ মজিবুর রহমান পেশোয়ারীকে নিয়ে এক টেবিলে বসে ইফতার করেন খালেদা জিয়া।
ইফতারে আরো অংশ নেন দৈনিক নয়া দিগন্ত সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন, দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ প্রমুখ।
এ ছাড়া ছিলেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, আহসান হাবিব লিংকন, এলডিপির রেদোয়ান আহমেদ, সাহাদাত হোসেন সেলিম, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, মুস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, জামায়াতে ইসলামীর শামীম সাঈদী, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, হামদুল্লাহ আল মেহেদি, ন্যাপের জেবেল রহমান গণি, গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া, ইসলামী ঐক্যজোটের মাওলানা আবদুল করীম খান, কল্যাণ পার্টির এম এম আমিনুর রহমান, সাম্যবাদী দলের সাঈদ আহমেদ, পিপলস লীগের গরীবে নেওয়াজ, সৈয়দ মাহবুব হোসেন, ন্যাপ ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, ডিএলের সাইফুদ্দিন আহমেদ মণি, মুসলিম লীগের এ এইচ এম কামরুজ্জামান খান, শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, ইসলামিক পার্টির আবু তাহের চৌধুরী, আবুল কাশেম, বিজেপির সালাহউদ্দিন মতিন প্রকাশ প্রমুখ।
বিএনপি নেতাদের মধ্যে আ স ম হান্নান শাহ, মাহবুবুর রহমান, খন্দকার মাহবুব হোসেন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবীর খোকন, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, রফিক শিকদার, নুরী আরা সাফা, আবেদ রাজা, শিক-কর্মচারী ঐক্যজোটের অধ্য সেলিম ভুঁইয়া, যুবদল নেতা জাহাঙ্গীর হাওলাদার প্রমুখ ইফতারে অংশ নেন।
Read More News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *