ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সাবেক সভাপতি আশরাফ আহমেদ বলেছেন, কঠোর মুদ্রানীতির মাধ্যমে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমানোর প্রচেষ্টা খুব একটা ফলপ্রসূ হচ্ছে না।
কারণ, আমদানি করা খাদ্যপণ্য সরবরাহ ব্যয়বৃদ্ধির মুখেও খাদ্যপণ্যের চাহিদা কমছে না। শুল্ক হ্রাস করে আমদানি ব্যয় কমানোর পাশাপাশি বিনিময় হারের উন্নতি ছাড়া এই অবস্থায় খাদ্যপণ্যের আমদানি ব্যয় কমানো দুঃসাধ্য। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি এসব কথা বলেন।
Read More News
ডিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি বলেন, সাধারণত বিনিময় হার শুধুমাত্র তখনই উন্নতি করতে পারে যখন রপ্তানি, এফডিআই (ফরেন ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট) বা অন্য ধরনের বিনিয়োগের মাধ্যমে একটি ব্যালেন্স অব পেমেন্ট উদ্বৃত্ত তৈরি করতে সক্ষম হয়। শ্রম সমস্যা এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বন্ধের বর্তমান প্রেক্ষাপটে এটি চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। বিকল্প হিসেবে আমাদের সামনে আছে বৈদেশিক রিজার্ভ সমর্থন করার জন্য বিদেশ থেকে ধার নেওয়া। সরকারি ব্যয় সংকোচন-রাজস্ব এবং উন্নয়ন ব্যয় উভয় ক্ষেত্রেই এবং উৎপাদনশীলতার ওপর ফোকাস করা।
তিনি বলেন, আইএমএফ জুলাই মাসের পর থেকে দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি কমার পূর্বাভাস দিয়েছে। তারা মনে করেন, সামনের দিনগুলো অত্যন্ত অনিশ্চিত এবং অর্থনীতির নিম্নমুখী প্রবণতার ঝুঁকি প্রকট। এটি সাধারণত ইঙ্গিত দেয় যে আইএমএফ ভবিষ্যতে প্রবৃদ্ধির কমার আরও পূর্বাভাস দিতে পারে। মূলত রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, বন্যা এবং কঠোর মদ্রানীতির কারণে তারা এই আশঙ্কা করছেন। অর্থবছর ২০২৫-এর প্রথম ত্রৈমাসিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর ২০২৫) উৎপাদন ব্যবসার অভিজ্ঞতা ছিল স্থবির বা নিম্নমুখী চাহিদা, ক্রমবর্ধমান খরচ এবং নিম্নমুখী লভ্যাংশের। গত কয়েক মাসে বেশির ভাগ ব্যবসায় আইনশৃঙ্খলা এবং নিরাপত্তা সমস্যা, জ্বালানি সংকট এবং কঠোর ব্যাংকিং তারল্যের কারণে উৎপাদন ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। মুষ্টিমেয় কিছু ক্ষতিগ্রস্ত ব্যাংক থেকে কার্যকরী মূলধনের জোগানের কড়াকড়ির কারণে এটি আরও বেড়েছে। এই সময়ে মুদ্রাস্ফীতি, বিশেষ করে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেশ শক্তিশালী ছিল।
আশরাফ আহমেদ বলেন, সাধারণত একই সময়ে নীতি ব্যবস্থার মাধ্যমে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা এবং প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা খুবই কঠিন। একমাত্র ব্যতিক্রম যখন আপনি উৎপাদনশীলতা বাড়াতে পারেন- এ জন্য অবিলম্বে প্রয়োজন স্থিতিশীল নিরাপত্তা পরিবেশের পুনরুদ্ধার, টেকসই মূল্যে শক্তির নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ, লজিস্টিক দক্ষতায় উন্নতি এবং টেকসই খরচে উৎপাদনশীল খাতে চলতি ঋণের প্রবাহ বাড়ানো।