চীনের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় স্বার্থে আঘাত হানে এমন অবস্থান থেকে দূরে থাকতে যুক্তরাষ্ট্রকে হুঁশিয়ারি করেছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। চীনা সীমান্তের কাছে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন নিয়ে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করলে এ নিয়ে চিন্তার কিছু নেই বলে আশ্বস্ত করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
এরপরও উত্তর কোরিয়ার বিতর্কিত পরমাণু কর্মসূচির বিরুদ্ধে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র যৌথভাবে কাজ করার বিষয়ে সম্মত হয়েছে। বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনের পরমাণু নিরাপত্তা সম্মেলনে অংশ নিতে আসা বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও কূটনীতিকরা হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমন্ত্রণে নৈশভোজে অংশ নেন। ওবামার সভাপতিত্বে দু দিনব্যাপী এই সম্মেলনে ৫৩টি দেশ ও কয়েকটি সংস্থার শীর্ষনেতারা অংশ নেন।
Read More News
ভোজ শেষে প্রেসিডেন্ট ওবামা, বিশ্বের যেসব স্থানে পারমাণবিক সরঞ্জাম ও তেজস্ক্রিয় উপকরণ রয়েছে সব জায়গায় নিরাপত্তা বাড়ানোর পাশাপাশি সেসবের মজুদ কমিয়ে আনার বিষয়ে বিশ্বনেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেন। পরমাণু অস্ত্র বিক্রি ও পাচার বন্ধের পাশাপাশি ইসলামিক স্টেটের মতো উগ্রবাদী জঙ্গি সংগঠন যেন এসব উপকরণের নাগাল না পায় সে বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন ওবামা।
বৈঠকে বিশেষ গুরুত্ব পায় উত্তর কোরিয়ার একের পর এক পারমাণবিক অস্ত্র বহনযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের বিষয়টি। এক্ষেত্রে পিয়ংইয়ংয়ের ওপর চাপ অব্যাহত রাখতে চীন, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র যৌথভাবে কাজ করবে বলে জানান ওবামা।
ওবামা বলেন, উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্রের মজুদ আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলেছে। এ অবস্থায় পিয়ংইয়ংয়ের ওপর জাতিসংঘ আরোপিত নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন করতে ও পরমাণু নিরস্ত্রীকরণে আমরা চীনের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করবো। দক্ষিণ চীন সাগর ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপের বিষয়ে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেন, তার দেশের সার্বভৌমত্বে আঘাত হানে এমন কোন পদক্ষেপ বরদাশত করা হবে না। চীনা সীমান্তের কাছে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন নিয়ে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, এর প্রভাবে ঐ অঞ্চলে মার্কিন প্রভাব বেড়ে যাবে। তবে এ বিষয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই বলে তাকে আশ্বস্ত করেন ওবামা।
এদিকে, সম্মেলনে অংশ নিয়ে প্যারিস ও বেলজিয়ামে সন্ত্রাসী হামলার উদাহরণ টেনে বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান ফরাসি প্রেসিডেন্ট। পরিসংখ্যান অনুযায়ী বিশ্বে বর্তমানে বোমা তৈরির ক্ষমতা সম্পন্ন ১৪ হাজার মেট্রিকটন ইউরেনিয়াম ও প্লুটোনিয়ামের মজুদ রয়েছে। যা দিয়ে জাপানের হিরোশিমায় যে বোমা ফেলা হয়েছিলো এমন ২০ হাজার বোমা তৈরি সম্ভব।
তবে ২০১৪ সালের পরমাণু সম্মেলনের পর পারমানবিক উপকরণের মজুদ উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে এবং সামনে আরো কমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। তারপরও পারমানবিক হামলার আশঙ্কা এড়ানো যায়না বলে জানান আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা আইএইএ- এর প্রধান ইউকিয়া আমানো।