নবাব পরিবারের শেষ বংশধর নবাব সলিমুল্লাহ খানের নাতি আলী হাসান আসকারি। এমন পরিচয় দিয়েই সাধারণ মানুষের কাছাকাছি। এরপর বিভিন্ন কৌশলে ভিআইপিদের সঙ্গে সখ্য করা। এসব দিয়ে বিভ্রান্ত করে শত শত মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট এই প্রতারকসহ তাঁর সহযোগি পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে। ফেসবুকে মন্ত্রী এমপিসহ ভিআইপিদের সংগে ছবি তুলে প্রতারণার ফাঁদ তৈরি করতেন আসকারি।
ডিএমপির সিটিটিসি উপ কমিশনার মাহাফুজুল ইসলাম বলেন, বিদেশে লোক পাঠানোর নাম করে সাড়ে তিনশ জন লোকের কাছ থেকে মেডিক্যাল করা বাবদ সাড়ে আট হাজার টাকা করে নিয়েছে। সে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মন্ত্রী এমপিসহ ভিআইপিদের সংগে এদের সঙ্গে ছবি তুলে সম্পর্ক গড়ে তুলে তাদের নাম ভাঙ্গিয়ে অসহায় এবং নিরীহ মানুষকে প্রতারণা করে ব্যবসা করে আসছিল। শুধু তাই নয়, ধানমন্ডির জাহাজবাড়ি, পুরান ঢাকার হোসনি দালানসহ এ ধরণের বিভিন্ন সম্পদের মালিকানার দাবি করেও চেষ্টা করছিলেন বেঁচা কেনার। জাতীয় পরিচয়পত্রে স্নাতক পাশ দেখালেও প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন মাধ্যমিক পাশের।
মাহাফুজুল ইসলাম আরও বলেন, সে ঢাকা-১০ আসনের উপনির্বাচনে হারিকেন মার্কা নিয়ে নির্বাচন করেছে। তার বক্তব্য নবাব সলিমুল্লাহ খানের আদর্শ জনগণের কাছে পৌঁছে দেয়া এবং সেবা করার জন্য সে নির্বাচন করেছে।
Read More News
নবাব বংশের তালিকা (কুরসিনামা) আছে। কিন্তু, ঢাকায় হঠাৎ আবির্ভাব হওয়া নবাব আলি হাসান আসকারীর নাম এই দুই কুরসির কোথাও পাওয়া যায়নি। অথচ আলি হাসানের দাবি, তিনি খাজা আমানুল্লাহর ছেলে। একপক্ষের কুরসিতে অবশ্য খাজা আমানুল্লাহর নাম পাওয়া গেছে। তার শুধু দু’জন কন্যাসন্তান রয়েছে, তারা কানাডায় বসবাস করেন। কিন্তু, সেখানে আলি হাসান আসকারী নামে কোনো ছেলে সন্তানের নাম নেই।
আবার আলি হাসান আসকারী নিজেও ফেসবুকে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দেন। নিজেকে আগে পাকিস্তানের নাগরিক বলে পরিচয় দিলেও সম্প্রতি ফেসবুকে লেখেন, তার জন্ম সৌদি আরবে।
ঢাকার নবাব পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, তারাও কুরসি ঘেটে দেখেছেন, আলি হাসান আসকারী নামে ঢাকার নবাব বংশে কেউ, কখনই ছিলেন না।
প্রতারক এই চক্রকে গ্রেপ্তারের পর নবাব পরিবারের এ্যামবুশ সীল, বিভিন্ন সরঞ্জাম, সিম কার্ড, একাধিক মোবাইলসহ প্রায় ৩৫০টি বিদেশ পাঠানোর নামে তৈরি করা মেডিক্যাল রিপোর্টসহ ভূয়া কোম্পানির লিফলেট উদ্ধার করে পুলিশ। ইতোমধ্যে দুটো মামলাও করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।