রাজধানীর খিলগাঁওয়ে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে গ্রেফতার হয়েছে ভুয়া দন্ত চিকিৎসক নূর হোসেন ও জাহিদুল ইসলাম। তারা দুজন শ্বশুর-জামাই। দুজনে মিলে পঞ্চগড় ডেন্টাল কেয়ার নামে খিলগাঁও তিলপাপাড়ায় গড়ে তুলেন একটি একটি দন্ত চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান।
শ্বশুর নূর হোসেন তৃতীয় শ্রেণি ও মেয়ের জামাই জাহিদুল ইসলাম পড়েছেন দশম শ্রেণি পর্যন্ত। দুই জনের সম্মিলিত পরিকল্পনায় হয়ে যান বিশেষজ্ঞ ডাক্তার।
Read More News
এখানে থেমে যাননি তারা। শ্বশুর-জামাই মিলে রাজধানীর খিলগাঁও তিলপাড়া এলাকায় গড়ে তুলেছেন পঞ্চগড় ডেন্টাল ক্লিনিক নামে একটি প্রতিষ্ঠান। যেখানে জামাই ও শ্বশুর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পরিচয়ে দীর্ঘদিন যাবত সাধারণ রোগীদের দন্ত চিকিৎসা দিয়ে আসছিলেন। পঞ্চগড় ডেন্টাল ক্লিনিক পরিচালনার আড়ালে অন্য চিকিৎসকের রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার করা প্রেসক্রিপশন প্যাডে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হিসেবে রোগী দেখে আসছিলেন তারা।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাব-৩ এর অভিযানে বের হয়ে আসে সকল রহস্য। পরে র্যাব-৩ এর ভ্রাম্যমাণ আদালত এই শ্বশুর-জামাইকে বিভিন্ন মেয়াদের সাজা দেন।
সোমবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর খিলগাঁওয়ের তিলপাড়ার ওই পঞ্চগড় ডেন্টাল ক্লিনিকে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব-৩। অভিযানের নেতৃত্ব দেন র্যাব-৩ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু।
অভিযান শেষে শ্বশুর নূর হোসেনকে দুই বছরের কারাদণ্ড এবং জামাতা জাহিদুল ইসলামকে এক বছরের কারাদণ্ড প্রদান করে র্যাব পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত। এসময় পঞ্চগড় ডেন্টাল কেয়ার নামক প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু বলেন, অভিযানে দেখা যায় অন্য ডাক্তারের রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার করে অপারেশনসহ দাঁতের সকল ট্রিটমেন্ট দিচ্ছেন নূর হোসেন ও জাহিদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে ভুয়া চিকিৎসক নূর হোসেন ওষুধের উচ্চারণও ঠিকমতো করতে পারছিলেন না। তখন সন্দেহবশত জানতে চাইলে মো. নূর হোসেন ভ্রাম্যমাণ আদালতকে জানান, তিনি তৃতীয় শ্রেণি পাস। সম্পর্কে তিনি অপর ভুয়া চিকিৎসক জাহিদুল ইসলামের শ্বশুর। জামাতা জাহিদুল আগে পাথর কোম্পানিতে চাকরি করতো, সেটা ছেড়ে শ্বশুরের সাথে ডেন্টাল ক্লিনিককে ভুয়া চিকিৎসা দেওয়া শুরু করেন।
জিহান কবির নামক এক চিকিৎসকের প্যাডে তারা স্বাক্ষর করে চিকিৎসাপত্র দিয়ে আসছিলেন। জামাই জাহিদুল ওষুধের নাম লিখতেন, আর শ্বশুর নুর হোসেন শুধু স্বাক্ষর করতেন। দীর্ঘদিন ধরে তারা এই জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া চিকিৎসা দিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিল।
ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু বলেন, নূর হোসেন দীর্ঘদিন যাবত এই প্রতারণার সঙ্গে জড়িত তিনি আগে চিকিৎসকদের অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করতেন। মাঝে মাঝে তিনি চিকিৎসকের অনুপস্থিতিতে চিকিৎসাপত্র দিতেন। বছরখানেক আগে তিনি নিজেই বেশি লাভের আশায় এই ‘পঞ্চগড় ডেন্টাল কেয়ার’ নামক প্রতিষ্ঠানটি গড়ে বসেন। জামাই-শ্বশুর মিলে চিকিৎসা দিয়ে আসছিলেন।
Sildenafilgenerictab News Bangla News Paper