পুলিশের গুলিতে নিহত সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর সিনহার সহযোগী স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শিপ্রা দেবনাথের ফেসবুকে প্রকাশিত একটি ভিডিও নিয়ে সমালোচনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর।
নুর তার স্ট্যাটাসে মেজর সিনহার হত্যাকাণ্ড নিয়ে কথা না বলার জন্য শিপ্রা দেবনাথ ও শাহেদুল সিফাতের সমালোচনা করে বলেন, তোমাদের ভূমিকা শুধু আমাকে, আমাদেরকে নয়, পুরো জাতিকেই হতাশ করছে।
শিপ্রার ভিডিও নিয়ে নুরের স্ট্যাটাসটি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো:-
Read More News
‘তোমাদেরকে সেলেব্রিটি বানানোর জন্য আমরা রাজপথে নামিনি, বরগুনায় আমার ভাই-বোনেরা প্রদীপ, লিয়াকতদের উত্তরসূরীদের লাঠিপেটা খায়নি, একজন এসআই চড় খায়নি। নেমেছিলাম সত্য উদঘাটনে। আমাদের মতো প্রতিবাদী মানুষগুলো রাজপথে না নামলে তোমাদেরকে মামলার আসামি হয়েই কারাগারে থাকা লাগতো মাস, বছর, অধিকন্তু হয়রানি।
ভেবেছিলাম তোমরা মুক্ত হলে আমরা সত্য উদঘাটনে যে সংগ্রামে নেমেছি সেটি সহজ হবে। কিন্তু তোমাদের ভূমিকা শুধু আমাকে, আমাদেরকে নয়, পুরো জাতিকেই হতাশ করছে।
তোমাদের পাশে পুরো জাতি ছিলো, তোমরা বুঝলে না! তোমরা চাইলে জাতির কাছে সৎ-সাহসী, অন্যায়ের বিরুদ্ধে আপোষহীন বীর হিসেবে নিজেদেরকে তুলে ধরে সম্মানিত হতে পারতে। কিন্তু মনে হচ্ছে ওদের ভয়ে তোমরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে যাচ্ছো! যা আমাদেরকে সাময়িক পীড়া দিলেও পরবর্তীতে তোমাদের জন্যই বিপদের কারণ হবে।
কারণ ওরা হয়তো এখন ওদের প্রয়োজনে তোমাদেরকে সত্য না বলার জন্য চাপ দিচ্ছে, পাশে থাকবে বলছে, প্রলোভন দেখাচ্ছে। কিন্তু প্রয়োজন শেষে ওরাই তোমাদেরকে বিপদে ফেলবে। তাই সময় থাকতে তোমাদের শুভবুদ্ধির উদয় হোক। কারণ, পরবর্তীতে বিপদে পড়লে কাউকে পাশে নাও পেতে পারো।’
গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফ বাহারছড়া চেকপোস্টে তল্লাশির সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় হত্যা ও মাদক আইনে এবং রামু থানায় মাদক আইনে পৃথক ৩টি মামলা দায়ের করে। এ মামলায় নিহত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খানের সঙ্গে থাকা শাহেদুল ইসলাম সিফাত ও শিপ্রা রানী দেব নাথকে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।
৫ আগস্ট নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বাদী হয়ে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ইন্সপেক্টর লিয়াকত, ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ৬ আগস্ট বরখাস্ত ওসি প্রদীপ ও লিয়াকতসহ ৭ আসামি কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।