নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) পরীক্ষার নামে রোগীদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগে সম্প্রতি জেকেজি হেলথ কেয়ারের প্রধান নির্বাহী (সিইও) আরিফুর রহমানসহ ছয় জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নমুনা ফেলে দিয়ে রোগীদের ভুয়া রিপোর্ট দেওয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ উঠেছে তার স্ত্রী প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরীর বিরুদ্ধেও।
তবে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলকে ডা. সাবরিনা আরিফ বলেন, জেকেজির প্রতারণার বিষয়ে তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ডা. আবুল কালাম আজাদ এবং এডিজিকে আগেই জানিয়েছিলেন।
এমনকি নিজেকে জেকেজির চেয়ারম্যান নন বলেও দাবি করেন তিনি। অথচ জেকেজির করোনা পরীক্ষার নামে মানুষের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ সামনের আসার আগে তিনি একাধিক গণমাধ্যমের সাক্ষাৎকারে নিজেকে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন।
Read More News
এ বিষয়ে ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরী বলেন, তিনি জেকেজির চেয়ারম্যান হওয়ার প্রশ্নই আসে না। এটি একটি ওভাল কোম্পানির অঙ্গসংগঠন। ওই গ্রুপের মালিক তার স্বামী আরিফুর রহমান।
প্রতিষ্ঠানটির প্রতারণার বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে জানানোর বিষয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়টি তিনি অধিদপ্তরের ডিজি ও এডিজিকে আগেই জানিয়েছিলেন।
এদিকে পুলিশ বলছে, ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরী জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালের রেজিস্টার চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায়ই জেকেজির চেয়ারম্যান পদে বসেন। সম্প্রতি তার স্বামী প্রতিষ্ঠানটির সিইও আরিফুর রহমান গ্রেপ্তার হওয়ার পর পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে প্রতারণার সঙ্গে ডা. সাবরিনার সম্পৃক্ত থাকার বিস্তারিত তথ্য দিয়েছেন। শিগগিরই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি নভেল করোনাভাইরাস পরীক্ষা না করেই রোগীদের মনগড়া রিপোর্ট দেওয়া অভিযোগ উঠে জিকেজি হেলথ কেয়ারের বিরুদ্ধে। এর প্রেক্ষিতে গত ২৪ জুন গুলশানে প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে জেকেজির সিইও আরিফুর রহমানসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ ঘটনায় রাজধানীর তেজগাঁও থানায় চারটি মামলাও দায়ের করা হয়েছে। বর্তমানে তারা সবাই কারাগারে আছে।
জানা যায়, করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করতো জেকেজি হেলথ কেয়ার। বুথ ছাড়াও রোগীদের বাসায় গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করতো প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর তাদের বিনামূল্যে নমুনা পরীক্ষার অনুমতি দিলেও প্রতিষ্ঠানটি এর জন্য রোগীদের কাছ থেকে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা নিতো। এরপর নমুনা পরীক্ষা না করেই রোগীদের একটি মনগড়া রিপোর্ট দিয়ে দেওয়া হতো।