বলিউড তারকা প্রিয়াঙ্কা চোপড়া, তাপসী পান্নু, রিতেশ দেশমুখসহ বেশ কয়েকজন তারকা তামিলনাড়ুর পি জয়রাজ এবং তাঁর ছেলে জে বেনিক্সের মৃত্যুতে ন্যায়বিচার চেয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছেন। ওই দুজন পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের কারণে মারা গেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
ভারতের বিনোদনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বলিউড বাবলের প্রতিবেদনে জানা যায়, লকডাউনের নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগে জয়রাজ ও তাঁর ছেলে বেনিক্সকে (যাকে ভুলভাবে ফেনিক্স বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছিল) তামিলনাড়ুর সাথানকুলাম থানা পুলিশ তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। তবে দুর্ভাগ্যক্রমে তাঁরা পুলিশ হেফাজতে মারা যান। এই ঘটনায় জনসাধারণের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। এমনকি তামিলনাড়ু পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে টুইটারে ‘হ্যাশট্যাগ জাস্টিস ফর জয়রাজ অ্যান্ড বেনিক্স’ ট্রেন্ড শুরু হয়েছে।
Read More News
অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা চোপড়া তাঁর টুইটে লিখেছেন, ‘যা শুনেছি, তাতে আমি স্তম্ভিত, ভীষণ হতবাক ও রাগান্বিত। কোনো অপরাধী; তাঁর অপরাধ যা-ই হোক না কেন, এ জাতীয় বর্বরতা তাঁর প্রাপ্য নয়। দোষীদের অবশ্যই বিনা শাস্তিতে ছেড়ে দেওয়া উচিত নয়। আমাদের তথ্য দরকার। নিহতদের পরিবার কেমন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তা কল্পনাও করতে পারছি না। তাঁদের জন্য আমাদের শক্তি ও প্রার্থনা রইল।’
#JusticeForJayarajandBennicks pic.twitter.com/vGi8m63If2
— PRIYANKA (@priyankachopra) June 26, 2020
তাপসী পান্নু লিখেছেন, ‘এটি অনেকগুলো ঘটনার একটি হতে পারে, কিন্তু এর মাধ্যমে তুষারগোলকের প্রভাব শুরু হতে পারে। পুরো ঘটনাটি হৃদয়বিদারক।’
বলিউড তারকা রিতেশ দেশমুখ লিখেছেন, ‘এটি করুণ এবং জাতীয় লজ্জা। ঘটনাটি পড়েই আমার মেরুদণ্ডে কাঁপন ধরেছে। এই বর্বরতার বিরুদ্ধে আমাদের সবাইকে এক হয়ে দাঁড়াতে হবে।’
বলিউড অভিনেত্রী জেনেলিয়া ডি সুজা লিখেছেন, ‘আমি শোকাহত ও বেদনার্ত। আমি অনিশ্চিত, কীভাবে আমরা এমন এক ভয়াবহতার দিকে যাচ্ছি… এ ঘটনা এতটাই নির্মম যে এটি আসলে আমার হৃদয় ভেঙে দিয়েছে…।’
এ ছাড়া এই ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়েছেন বীর দাশ, শমিতা শেঠি, নিখিল আদভানি, কাজল আগরওয়াল প্রমুখ। সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের হাতে জর্জ ফ্লয়েড নামের এক আফ্রো-আমেরিকান ব্যক্তি মারা যাওয়ার পর এর প্রতিবাদে বিশ্বব্যাপী আন্দোলন গড়ে ওঠে।

মৃতের পরিবারের জানিয়েছে , এলাকায় জয়রাজ পি’র মোবাইলের দোকান রয়েছে । তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, লকডাউনের সময় জনতা কার্ফুচলাকালীন আইন অমান্য করে দোকান খুলেছিলেন তিনি । সেই অপরাধে শনিবার পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে । ঘটনার কথা শুনে ছেলে জে বেনিক্সও তড়িঘড়ি থানায় যান বাবাকে ছাড়িয়ে আনতে । যদিও দু’জনের কেউই আর বাড়ি ফিরে আসেনি । পরিবারের অভিযোগ, পুলিশি নির্যাতনের জেরেই তাঁদের মৃত্যু হয়েছে । তাঁদের উপর শারীরিক নির্যাতন চালান হয় । অভিযোগ মৃত জয়রাজ পি-এর পায়ুদ্বারে লাঠি বা বোতল জাতীয় কিছু ঢুকিয়ে দেয় পুলিশ । তার যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে অসুস্থ হয়ে পড়েন বৃদ্ধ জয়রাজ । তারপর হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও শেষরক্ষা হয়নি । ছেলে জে বেনিক্সও প্রবল রক্তক্ষরণের জেরে মারা যায় হাসপাতালে । যদিও পুলিশের দাবি, প্রচণ্ড বুকে ব্যথা হওয়ায় বৃদ্ধকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে, মারা যান তিনি ।
এ প্রসঙ্গে একটি সমর্থিত সূত্র জানিয়েছে, সারা রাত থানা থেকে প্রায় ২০০ মিটার দূর পর্যন্ত দু’জনের চিৎকারের আওয়াজ শোনা যাচ্ছিল । বাবা-ছেলের বিরুদ্ধে শনিবার ১৮৮, ৩৮৩ এবং ৫০৬ (ll) ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ । এ দিকে, বাবা-ছেলের মৃত্যুর পড় ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা । গ্রামের হাজার হাজার মানুষ থানার সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখান । অভিযুক্ত পুলিশ আধিকারিকদের গ্রেফতারির দাবিতে অবস্থানে বসেন তাঁরা । ইতিমধ্যেই মর্মান্তিক এই ঘটনার প্রেক্ষিতে মামলা দায়ের হয়েছে আদালতে । ক্ষোভে ফুঁসছে এলাকাবাসী । নিন্দার ঝড় উঠেছে গোটা দেশে ।
Sildenafilgenerictab News Bangla News Paper