করোনা কেন হার্ট অকেজো করে

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমেই বেড়েই চলেছে। করোনাভাইরাসের সব থেকে খারাপ দিক হলো এই ভাইরাস শ্বাসনালী ও ফুসফুসকে সরাসরি আক্রমণ করে। এই ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে পুরোপুরি সেরে ওঠা কিছু মানুষের ফুসফুস অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও জানা যায়। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির শ্বাসকষ্ট, জ্বর, মাথা ব্যথা, হাঁচি, কাশির মতো সমস্যা দেখা।
Read More News

করোনা ভাইরাস মানবদেহের কোন কোন কোষকে আক্রমণ করে তা শনাক্তে বিজ্ঞানীরা কাজ করে চলেছেন। এক্ষেত্রে তারা মানবদেহের একটি ম্যাপ করছেন। গবেষকরা এখন পর্যন্ত প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করেছেন যে, কোভিড-১৯ সংক্রমিত হয় নাক ও চোখ দিয়ে। নাকের দুটি বিশেষ ধরনের সেলকে হাইলাইট করা হয়েছে। এ দুটি সেল গবলেট এবং সিলিয়েটেড সেল নামে পরিচিত। একেই করোনা ভাইরাস সংক্রমণের প্রাথমিক পয়েন্ট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ ছাড়া ক্ষুদ্রান্ত্র ও হার্টের মতো গুরুত্বপূর্ণ তন্ত্রও করোনা ভাইরাস গ্রহীতা হিসেবে পাওয়া গেছে।

করোনাভাইরাস কোনো জীবিত প্রাণীর শরীরের বাইরে বেশিক্ষণ বেঁচে থাকতে এবং বংশ বৃদ্ধি করতে পারে না। ভাইরাস শরীরের ভিতরে ক্ষতি করে থাকে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কোনো ব্যক্তি যখন কাশি বা নাক ঝাড়েন তখন ভাইরাসটি শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে বের হয়ে ছড়িয়ে পড়ে। অন্যরা তা ড্রপলেটের মাধ্যমে নিশ্বাস গ্রহণ বা চোখ, নাক ও মুখের স্পর্শের মাধ্যমে ফুসফুসে সংক্রমিত হয়।

লক্ষণ শুরু হওয়ার প্রথম তিন দিনে ভাইরাস গলার পিছন দিকে আক্রমণ করে। ফলে গলা ব্যথা ও শুকনো কাশি শুরু হয়। পরে তা শ্বাসনালীর নিচের দিকে চলে যায়। লক্ষণ দেখা দেওয়ার চার থেকে ৯ দিনে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়।

ভাইরাসটি বংশ বিস্তার করতে করতে ফুসফুসে পৌঁছায়। এতে ফুসফুসের থলিতে ছিদ্র হয়ে তা তরল দ্বারা পূর্ণ হয় এবং নিউমোনিয়ার সৃষ্টি হয়। ফুসফুসের প্রদাহের কারণে আক্রান্ত ব্যক্তির নিশ্বাস নিতে কষ্ট হয়। লক্ষণ শুরুর আট থেকে ১৫ দিনের মধ্যে তীব্র শ্বাসকষ্ট হয়।

করোনাভাইরাস শরীরে ঢোকার পর প্রথমে শ্বাসনালি ও পরে ফুসফুসে অবস্থান করে। ভাইরাসটি ফুসফুসের ছোট্ট ছোট্ট বলের মতো জায়গায় গিয়ে আরামসে বংশবৃদ্ধি করতে থাকে। এতে ফুসফুসের বলগুলো নষ্ট হয়ে যেতে থাকে।

আর দুর্বল ইমিউন সিস্টেম হলে ভাইরাসের বংশবৃদ্ধি বেড়ে যাবে ও আপনার ফুসফুস ক্রমান্বয়ে পরাস্ত হতে থাকবে ভাইরাসের হাতে। ফুসফুস পরাস্ত হতে থাকলে আস্তে আস্তে শরীরে প্রয়োজনীয় অস্কিজেনের অভাব দেখা দেয় এবং রোগী অস্কিজেনের জন্য একসময় হাঁসফাঁস করতে থাকে। পরবর্তীতে শরীরের অন্যান্য অর্গানগুলো (কিডনি, হার্ট, যকৃত, প্যানক্রিয়াস ইত্যাদি) অক্সিজেনের অভাবে একে একে অকেজো হতে শুরু করে।

এই গবেষণাপত্রের সিনিয়র লেখক ইমপেরিয়ালের ন্যাশনাল হার্ট অ্যান্ড লাঙ্গ ইন্সটিটিউটের ড. মিশেলা নোসেডা গবেষণার গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো ব্যাখ্যা করেছেন। এতে বলেছেন এই ভাইরাস শুধু শরীরকেই আক্রান্ত করে এমন না, এটা শ্বাস-প্রশ্বাস নেয়ার পথের বাইরের অঙ্গগুলোকেও টার্গেট করতে পারে। এ থেকে সিস্টেমিক রোগ সৃষ্টি হতে পারে। কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত রোগীদের শতকরা ২০ ভাগের ক্ষেত্রে দেখা গেছে তাদের হার্টের টিস্যু নষ্ট হয়ে গেছে। তার ফলে হার্টফেইল করেছে। তাই এটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, কিভাবে এই ভাইরাস হার্টের কোষে পৌঁছে। এটা নির্ধারণ করত হার্টে পৌঁছার ম্যাপিং করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *