সুনামগঞ্জের ছাতকে নাদামপুর গ্রামে বাবা-মায়ের কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন ‘গরিবের ডাক্তার’ খ্যাত করোনা যুদ্ধে প্রথম মৃত্যুবরণকারী চিকিৎসক ডা. মঈন উদ্দিন।
বুধবার (১৫ এপ্রিল) রাত সাড়ে আটটায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিধিমালা অনুসরণ করে জানাযা শেষে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
এর আগে রাত সাড়ে ৭টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল থেকে তার মরদেহ গ্রামে নেওয়া হয়। পরে কঠোর নিরাপত্তার সাথে কবরস্থানের পাশেই তার জানাযা অনুষ্ঠিত হয়, একটু দূর থেকে জানাযায় ২০/২২ জন স্বজন উপস্থিত হন।
Read More News
এছাড়া ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার শর্তে পিপিই পরিয়ে তার ছয় স্বজনকে দাফন কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়।
এদিকে বিকেল থেকে নাদামপুর ও আশপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত হন। একই সাথে সিলেট থেকে প্রয়াত এ চিকিৎসকের কিছু সহকর্মীও তার গ্রামের বাড়িতে ছুটে যান, তারা পিপিই পরে সতর্কতার সাথেই সেখানে যান।
বুধবার (১৫ এপ্রিল) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ডা. মঈন। এর আগে গত ৫ এপ্রিল তার করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়। এরপর তিনি বাসায় কোয়ারেন্টাইনে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।
৭ এপ্রিল রাতে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন সেন্টারে নেওয়া হয়। সেখানে প্রথমে তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছিল। পরদিন অবস্থার আরও অবনতি হলে পরিবারের সিদ্ধান্তে তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। বুধবার ভোর রাতে তিনি মারা যান।
প্রথমে ঢাকায় দাফনের সিদ্ধান্ত হলেও পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে গ্রামের বাড়িতেই দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়। ঢাকায় আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামের পক্ষ থেকে তাকে গোসল করানো ও কাফন পরানো হয়। পরে অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে নেওয়া সুনামগঞ্জের ছাতকের গ্রামের বাড়িতে।
ডাক্তার মঈন উদ্দিন সিলেটের ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ছিলেন। তিনি মেডিসিনের পাশাপাশি কার্ডিলজিরও চিকিৎসক ছিলেন। এফসিপিএস-এর পাশাপাশি তিনি কার্ডিওলজিতে এমডি করেন। এ কারণে রোগীদের কাছে তিনি ছিলেন খুবই জনপ্রিয়। তিনি দরিদ্র রোগীদের কাছে গরিবের ডাক্তার বলেও খ্যাতি পেয়েছিলেন।
দুই সন্তানের জনক ডা. মঈনের স্ত্রী ডা. রিফাত জাহান সিলেটের পার্ক ভিউ মেডিকেল কলেজের ফিজিওলজি বিভাগের চেয়ারম্যান।