বাবা ইঞ্জিনিয়ার মো. আল আমিন সরকার অফিসে বসে দেখলেন, গৃহকর্মী শাহিদা বাবা-মার অনুপস্থিতিতে ছোট্ট শিশুটিকে নির্দয়ভাবে মারছেন। বাবা-মা দুজনেই চাকরি করেন। ছোট্ট শিশুটিকে রেখে যান বাসায় গৃহকর্মী শাহিদা ওরফে তাজনারার (৪৫) কাছে।
গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর শাহজাহানপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ইতোমধ্যে ছোট্ট শিশুকে ভয়াবহ নির্যাতনের দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
জানা যায়, বাবা মো. আল আমিন সরকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। অন্যদিকে, শিশুটির মা লুৎফুন্নাহার উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। এই দম্পতির একমাত্র শিশু আবদুল্লাহ আবতাই আয়াতের বয়স মাত্র দুই বছর। স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই চাকরি করায় আয়াত থাকত বাসায় গৃহকর্মী শাহিদার কাছে। কিছুদিন ধরেই সন্তানকে দেখে এমনই কিছু একটা আশংকা হয়েছিল বাবার। যে কারণে তিনি দ্রুত নিজের বাসায় সিসি ক্যামেরা স্থাপন করেন। আইপি ক্যামেরায় ধারণকৃত ফুটেজ তিনি নিজের স্মার্টফোনেই লাইভ দেখতে পারতেন।
Read More News
এদিকে, গত বৃহস্পতিবার অফিসে বসে ভয়ংকর এক দৃশ্য চোখে পড়ল আল আমিন সরকারের। সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়ে গৃহকর্মী দ্বারা সন্তানকে নির্যাতনের দৃশ্য! বাথরুম থেকে ঘরের ভেতর ছুড়ে ফেলে দিয়ে ওইটুকু শিশুকে একের পর এক লাথি মারতে থাকে সেই গৃহকর্মী শাহিদা! অতঃপর ক্রন্দনরত শিশুকে সেভাবে ফেলে দিয়েই আবারও নিজের কাজে মন দেয় সে। এ দৃশ্য দেখার সঙ্গে সঙ্গেই তিনি ছুটেন বাসার দিকে। উদ্ধার করেন নিজের সন্তানকে।
এ ঘটনায় গত ১৫ নভেম্বর রাত সোয়া ৯টার দিকে শাহজাহানপুর থানায় শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০১৩ (সংশোধিত ২০১৮) এর ৭০ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন আল আমিন সরকার। এ ঘটনায় পরে অভিযুক্ত গৃহকর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
শিশুটির বাবা আল আমিন সরকার জানান, ‘আমি একজন অসহায় বাবা, যাকে দেখতে হয়েছে দুই বছরের সন্তানকে বীভৎস মারের দৃশ্য! এই নির্যাতনের দৃশ্য দেখেও কিছু করতে না পারার আক্ষেপে পুড়ছি আমি। বাচ্চাটা মার আর লাথির ভয়ে এতটাই ভীত হয়ে পড়েছিল যে, ‘বাবা’ বলতে যেন ভুলেই গিয়েছিল!