প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলমান রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে তিনটি প্রস্তাব তুলে ধরেছেন বিশ্বনেতাদের সামনে। এ সঙ্কটের ভুক্তভোগী দেশের সরকার প্রধান হিসেবে আজ সোমবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে শরণার্থী সঙ্কট নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠকে প্রস্তাবগুলো তুলে ধরেন তিনি।
মিয়ানমারকে রোহিঙ্গাদের প্রতি বৈষম্যমূলক আইন ও নীতি বাতিল এবং বৈষম্যমূলক আচরণ বন্ধ করতে হবে। এছাড়া রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক স্থানান্তরিত করার প্রকৃত কারণগুলো খুঁজে বের করতে হবে।
Read More News
মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের নাগরিক সুরক্ষা ও অধিকার নিশ্চিত করে একটি সহায়ক পরিবেশ তৈরি করতে হবে। প্রয়োজনে একটি ‘সেইফ জোন (নিরাপদ অঞ্চল)’ প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের সুপারিশের আলোকে ন্যায়বিচার ও জবাবদিহি নিশ্চিত করে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের নৃশংসতার হাত থেকে বাঁচাতে হবে।
মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে সেনা অভিযানে নিপীড়নের মুখে গত বছরের আগস্ট থেকে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এই নিপীড়নকে ‘জাতিগত নির্মূল অভিযান’ হিসেবে দেখছে জাতিসংঘও।
সোমবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে শরণার্থী সঙ্কট নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের সভায় রোহিঙ্গা সঙ্কটের ভুক্তভোগী দেশের সরকার প্রধান হিসেবে এই প্রস্তাবনা বিশ্ব নেতাদের কাছে উত্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে সভাপতিত্ব করেন জাতিসংঘ শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশানার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বক্তব্যে বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে যেখানে তারা শতাব্দী ধরে বসবাস করত, সেখান থেকে তাদের জোরপূর্বক বিতাড়িত করা হয়েছে। মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আশ্রয় দিলেও ভিন্ন দেশে এই নাগরিকদের চাহিদা মেটাতে গিয়ে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়ার কথাও বিশ্ব নেতাদের অবহিত করে তিনি বলেন, মিয়ানমারের আরাকানের এই বিপুল সংখ্যক নাগরিকদের স্থান দেওয়ার বিরূপ প্রভাব আমাদের সমাজ, পরিবেশ ও অর্থনীতির উপর পডছে।
শেখ হাসিনা বলেন, একটি দায়িত্বশীল সরকার হিসাবে আমরা বাংলাদেশের সীমানা খুলে দিয়েছি এবং জোরপূর্বক স্থানান্তরিত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি। আমরা কেবল তাদের জীবনই বাঁচাইনি, আমরা অঞ্চলের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করেছি। আমরা চাই রোহিঙ্গারা নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিয়ে তাদের মূল ভূমিতে ফিরে যাক।