এহসানের প্রতিবেদনে জেল খাটেন খালেদা জিয়া

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে ২৫ মাস জেল খাটানোর মাস্টারমাইন্ড বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) উপপ্রধান একেএম এহসান। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় আদালতে জমা দেওয়া আর্থিক প্রতিবেদনে তিনি লেনদেনের বিভ্রান্তিকর তথ্য উপস্থাপন করেন। ট্রাস্টের ২ কোটি টাকা উত্তোলন করে ফিক্সড ডিপোজিট রিসিট (এফডিআর) হিসেবে পুনরায় জমা দেওয়ার ঘটনাকে তিনি আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে প্রতিবেদন দেন।

এ বিষয়ে দুদকের আইনজীবী আসিফ হাসান বলেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় কোনো অর্থ আত্মসাৎ হয়নি। তিনি বলেন, এক অ্যাকাউন্ট থেকে আরেক অ্যাকাউন্টে অর্থ গেলেও এখানে আত্মসাতের কোনো ঘটনাই ঘটেনি। তবে সুদে আসলে অ্যাকাউন্টেই টাকাটা জমা আছে। কোনো টাকা ব্যয় হয়নি। জানা গেছে, ২০১৮ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদন্ডের সাজা দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত। ওই দিনই তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে সরকারের নির্বাহী আদেশে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সাময়িক মুক্তি পান খালেদা জিয়া। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় একেএম এহসান কেবল ভুল ব্যাখ্যাই দেননি, ইচ্ছাকৃতভাবে বিভ্রান্তিকর তথ্যও দিয়েছেন। একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মতো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির বিষয়ে তথ্য বিকৃতি করে উপস্থাপন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
Read More News

বিচার প্রক্রিয়ায় যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। ভুল উপস্থাপনার ফলে দুই বছরের বেশি সময় জেল খাটতে হয়েছে খালেদা জিয়াকে। ব্যক্তি আক্রোশে পক্ষপাতমূলত প্রতিবেদনের কারণে নিরপেক্ষ ও প্রকৃত তথ্যের বিকৃতি বাংলাদেশ ব্যাংকের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করে। ছাত্র জনতার আন্দোলনে সরকার পতনের পর নতুন খেলায় মেতেছেন একেএম এহসান। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান পদে নিয়োগে প্রভাব বিস্তার করছেন তিনি। একেএম এহসান নিজেই বিএফআইইউ প্রধান পদ পেতে মরিয়া হয়ে অন্য প্রার্থীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে নেমেছেন। ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর অভিযোগ দিয়ে নামসর্বস্ব গণমাধ্যমে প্রচার করাচ্ছেন। অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে দেশের গুরুত্বপূর্ণ সংস্থার প্রধান হিসেবে নিজেকেই আসীন করতে চান একেএম এহসান। যুগযুগ ধরে এহসানের মতো দলীয় লোকদের কারণে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলো কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে না।

তাই বিগত সময়ে একেএম এহসান যত প্রতিবেদন তৈরি করেছেন সব তদন্ত করার কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তার এমন কর্মকান্ডে বিএফআইইউর বিশ্বাস কমার পাশাপাশি নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রতি দেশবাসী এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারদেরও আস্থা কমে যায়। তাই বিএফআইইউর সুনাম অক্ষুণœ রাখতে একেএম এহসানকে উপপ্রধান পদ থেকে বরখাস্তের পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগের নিরপেক্ষ তদন্ত করার দাবি উঠেছে। এহসানের প্রভাবিত সব প্রতিবেদন নির্ভুল এবং নিরপেক্ষতা নির্ধারণের জন্য একটি অডিট করা প্রয়োজন বলেও জানান সংশ্লিষ্টরা। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জোরালো হয়েছে। এতে সবার কাছে একটি স্পষ্ট বার্তা যাবে যে বিএফআইইউর মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর বিশ্বাসযোগ্যতা এবং দেশের আর্থিক ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা ফেরানোর জন্য কোনো কর্মকর্তার ক্ষমতার অপব্যবহার সহ্য করে না নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *