বাংলাদেশের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নতুন মাত্রা নিয়ে এসেছে বন্ধু খোঁজার মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ম্যাচস্টিকস। ভৌগলিক অবস্থানের ওপর ভিত্তি করে বন্ধু খোঁজা ও বন্ধুত্ব তৈরির এই সামাজিক মাধ্যমটি বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি। শুরুটাও ছিল ভিন্ন রকমের। ভালোবাসার গল্পের বিশ্বরেকর্ডের মাধ্যমে এদেশে কার্যক্রম শুরু করে তারা। ভিন্ন রকম আর আকর্ষণীয় এই অ্যাপটি যাত্রা শুরু এক মাসের মধ্যেই বেশ সাড়া ফেলে। শুধু তাই নয়, বন্ধু খোঁজার এই অ্যাপে আরো নতুন নতুন চমক আসতেই থাকবে বলে জানায় ম্যাচস্টিকস কর্তৃপক্ষ। এ সস্পর্কে সম্প্রতি কথা হয় ম্যাচস্টিকের মূল প্রতিষ্ঠান মোবিমিডিয়ার ব্যবসায় উন্নয়ন ব্যবস্থাপক কিয়ান অ্যাডম্যানার সঙ্গে।
ম্যাচস্টিকস কি?
কিয়ান অ্যাডম্যানা: ম্যাচস্টিকস মূলত একটি বন্ধু খোঁজার মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন। এটি কাজ করে অ্যান্ড্রয়েড ও আইওএস প্ল্যাটফরমে। মোবিমিডিয়ার এই সেবার মাধ্যমে লিঙ্গ, বয়স ও দূরত্বের ভিত্তিতে বন্ধু খোঁজা, বন্ধুত্ব তৈরি ইত্যাদি আরও সহজ ভাবে করা যায়। এ ছাড়া বন্ধুর সঙ্গে চ্যাট করার ক্ষেত্রেও এসেছে বৈচিত্র। চমৎকার সব ইমোজি আর মজার মজার চমক ম্যাচস্ট্রিকসকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে। Matchstix মূলত পৃথিবীর অন্যতম জনপ্রিয় ম্যাচমেকিং অ্যাপ। এটি বিশ্বাস করে সবার জন্য উপযুক্ত বন্ধু খুঁজে বের করায়। Matchstix বিশ্বাস করে ভালোবাসা আর সম্পর্কে।
ম্যাচস্টিকসের শুরুর গল্পটা কি?
কিয়ান অ্যাডম্যানা: ম্যাচস্টিকসের যাত্রা শুরুর গল্পটা একটু ভিন্ন ম্যাচস্টিকস সব সময়ই ভালোবাসা আর সম্পর্ককে সম্মান করে। ম্যাচস্টিকস আসলে ভালোবাসার প্ল্যাটফরম। এই চিন্তা থেকেই আমরা চেয়েছিলাম এদেশে আমাদের আনুষ্ঠানিক যাত্রাটা যেনো প্রাসঙ্গিক একই সঙ্গে অন্যরকম হয়। আর ভালোবাসা দিবনের চেয়ে ভালো দিন ম্যাচস্টিকসের জন্য আর কি হতে পারে! সেই সঙ্গে ভালোবাসা উদযাপনের আনন্দময় আয়োজন ছিল। এর আগে থেকেই ভালোবাসার গল্প সংগ্রহ করেছি আমরা। ১৪ ফেব্রুয়ারি ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোসবে দিনভর ভালোবাসা উদযাপনের অনুষ্ঠান আয়োজন ছিল। আমরাসব মিলিয়ে ৬৮৪২ টি ভালোবাসার গল্প পেয়েছি। এটা বিশ্বরেকডের জন্য আবেদন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আমরা আশাবাদী। অদ্ভুত সব গল্প পেয়েছি আমরা। সেরা গল্পগুলোকে নিয়ে পরবর্তীতে টেলি-ছবি তৈরি করাসহ আকর্ষণীয় পরিকল্পনা আছে আমাদের।
ম্যাচস্টিকস মূলত কাদের কাছে বেশি আকর্ষণীয় হবে বলে মনে করছেন?
কিয়ান অ্যাডম্যানা: এটা তরুণদের জন্য। যারা নিজেদের নেটওয়ার্কটাকে বাড়াতে চায়। নতুন বন্ধুত্ব করতে চায়। এমনকি নতুন সম্পর্ক তৈরি করতে চায়।
কিভাবে কাজ করে এটি?
কিয়ান অ্যাডম্যানা: ম্যাচস্টিকস ব্যবহার খুবই সহজ। অ্যান্ড্রয়েড বা আইওএস এ ইনস্টল করার পর ১ মিনিটেই অ্যাকাউন্ট খোলা যায় এখানে। অ্যাকাউন্ট খুলতে একটি মোবাইল ফোন ও ফেসবুক আইডি প্রয়োজন হবে। নিশ্চিত করার জন্য মোবাইল ফোনে চার ডিজিটের একটি পিন আসবে। ফেসবুক থেকেই বয়স, সেক্স ও লোকেশনের মতো প্রাথমিক তথ্য নিয়ে নেয় এই অ্যাপ। ব্যস্, হয়ে গেল আপনার ম্যাচস্টিকস অ্যাকাউন্ট। এবার বন্ধু খোঁজার পালা। দূরত্ব, বয়স, সেক্স ইত্যাদি তথ্যের ওপর ভিত্তি করে বন্ধু খুঁজতে পারবেন আপনি। পছন্দের মানুষকে অ্যাড রিকোয়েস্ট পাঠাতে পারবেন। তার সম্মতি থাকলে আপনার ম্যাচ হয়ে যাবে। এবার সম্পর্ক তৈরির দায়িত্ব আপনার।
অন্য সামাজিক মাধ্যম থেকে এখানে বেশি কি আছে?
কিয়ান অ্যাডম্যানা: চমৎকার একটি বিষয় আছে ম্যাচস্টিকসে। ধরেন আপনি কোন একটা অনুষ্ঠানে গিয়েছেন। সেখানে কাউকে দেখে পছন্দ হলো আপনার। কিন্তু ফেসবুক আইডি বা মোবাইল নম্বর নেই আপনার কাছে। এখানে ম্যাচস্টিকস আপনাকে সহায়তা করতে পারে তার সঙ্গে কানেকটেড হতে। ম্যাটস্টিকসে খুঁজলে আশপাশে যারা ম্যাচস্টিকসে আছে তাদের খুঁজে বেরকরেতে পারবেন আপনি।
তবে ম্যাচস্টিকসের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ঠ এর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ফোন নম্বর ও ফেসবুক আইডির মাধ্যমে ভুয়া প্রোফাইলগুলো চিহ্নিত হয় এখানে। এছাড়া আপনি না চাইলে ম্যাচস্টিকসে কেউ আপনার তথ্য জানতে পারবে না অথবা বিরক্ত করেত পারবে না।
ম্যাচস্টিকস কেমন সাড়া পাচ্ছে বাংলাদেশে
কিয়ান অ্যাডম্যানা: দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার অনেকগুলো দেশে ম্যাচস্টিকস এখন তুমুল জনপ্রিয়। বাংলাদেশেও ব্যপক সাড়া মিলেছে। যাত্রা শুরুর এক সপ্তাহের মধ্যেই ম্যাচস্টিকসে ৩৭০০টি ম্যাচ হয়েছে, প্রতিদিন এ সংখ্যা বাড়ছেই। বিস্তারিত জানা যাবে Fb.com/matchstixbangladesh