জামায়াতের আমীর মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর প্রধান আইনজীবী ও সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেছেন, ‘আলবদর বাহিনী এবং মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যাকণ্ডের সঙ্গে নিজামীর সরাসরি সম্পৃক্ততা ছিল না। আপিল বিভাগ সাক্ষ্য পর্যালোচনার ক্ষেত্রে অনেক ক্ষেত্রে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে পারেনি। তাই আমরা বিশ্বাস করি রিভিউতে তারা বিষয়টি পুংখানুপুংখভাবে দেখবেন। আমরা আশা করি নিজামী রিভিউতে খালাস পাবেন।’ আজ দুপুরে আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় নিজামীর রিভিউ আবেদন দায়ের করার পর এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ সব কথা বলেন।
খন্দকার মাহবুব হোসেন মনে করছেন নিজামীর অপরাধে সরাসরি সম্পৃক্ততা না থাকায় ও সাক্ষ্য পর্যালোচনা করলে তিনি ন্যায়বিচার পাবেন। তিনি বলেন, ‘দুইটা ব্যাপারে আমরা আশাবাদী। যে সাক্ষী আছে তা পুনর্বিবেচনা হলে, তার যেহেতু সরাসরি অংশগ্রহণ নাই তাই তিনি ন্যায়বিচার পাবেন বলে আমরা আশা করছি। মুজাহিদের রায়ে আপিল বিভাগ বলেছেন, আল বদর গঠন করেছিল পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র সংঘ। অথচ ১৯৭১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পূর্ব পাকিস্তান ইসলামী ছাত্রসংঘের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন না নিজামী। তিনি তৎকালীন পাকিস্তানের ছাত্রসংঘের সভাপতি ছিলেন। তাই আল-বদর গঠনের জন্য নিজামীকে দোষী সাব্যস্ত করা যায় না।’ তিনি বলেন, ‘নিজামী সাহেব একজন আলেম ব্যক্তিত্ব।
Read More News
এবং তার বিরুদ্ধে ৭১ থেকে যতোগুলো বই লেখা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের ওপরে ও আলবদর বাহিনীর ওপরে সেখানে কোথাও তার নাম নেই। বরং সাক্ষীতে আছে আলবদর বাহিনীর সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন এমন কোনো সরাসরি প্রমাণ নেই। সেহেতু আমরা আশাবাদী রিভিউতে তিনি খালাস পাবেন। এটাই আমাদের বিশ্বাস, এটাই আমাদের আশা।’ আপিলে নিজামীর আইনজীবীরা ৪৬টি গ্রাউন্ড দিয়েছেন। আবেদনের পৃষ্ঠা সংখ্যা ৭০। দীর্ঘ এই রিভিউ আবেদনে যে যুক্তি তুলে ধরা হয়েছে তা পর্যালোচনা করে রিভিউতে ন্যায়বিচার পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী খন্দকার মাহবুব। তিনি বলেন, ‘নিজামীকে ট্রাইব্যুনাল চারটি অভিযোগে ফাঁসি দিয়েছিল এর মধ্যে আপিল বিভাগ রায়ে তিনটি বহাল রেখেছেন, আর একটিতে খালাস দিয়েছেন।
সেই রায়ের বিপক্ষে পুনর্বিবেচনার জন্য আমরা রিভিউ পিটিশন ফাইল করেছি। আমরা রিভিউতে দেখিয়েছি। আপিল বিভাগ সাক্ষ্য পর্যালোচনায় অনেক ক্ষেত্রে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করেন নাই। আমরা বিশ্বাস করি রিভিউ হলে তারা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিষয়টি দেখবেন।’ তাছাড়া নিজামীর বিপক্ষে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তা করেছে পাক আর্মি। তার দায় নিজামীর ওপর পড়ে না উল্লেখ করে খন্দকার মাহবুব বলেন, ‘নিজামী সাহেবের বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলোর কথা বলা হয়েছে, সবকিছুই কিন্তু পাক আর্মি করেছে। এবং ঘটনাচক্রে দেখানো হয়েছে তিনি তাদের সঙ্গে ছিলেন। আপিল বিভাগে শুনানিতে তখনো বলেছি। পাকিস্তান বাহিনী যখন অপারেশন করে মাওলানা নিজামীর ন্যায় ২১ বছরের এক যুবক তার সঙ্গে থেকে তাকে দিকনির্দেশনা দিবে এটা হাস্যকর ব্যাপার। আমরা মনে করি আপিল বিভাগ রিভিউতে তা বিবেচনায় নিবেন। সবকিছু বিবেচনা করে আমরা আশাবাদী।