দেশটির ৪৬তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতা জো বাইডেন। তাঁর সহযোগী হিসেবে শপথ নিয়েছেন দেশটির প্রথম নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস।
স্থানীয় সময় আজ বুধবার দুপুরে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জন রবার্টসের কাছে শপথবাক্য পাঠ করেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। আর ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস শপথ নিয়েছেন বিচারপতি সোনিয়া সোটোমেওরের কাছে।
নজিরবিহীন নিরাপত্তার মধ্যে এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হয়। প্রথা ভেঙে নতুন প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দেননি বিদায়ী ডোনাল্ড ট্রাম্প। শপথের আগেই হোয়াইট হাউজ ছেড়ে ফ্লোরিডায় পাড়ি জমান তিনি।
Read More News
শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, বিল ক্লিনটন ও জর্জ ডব্লিউ বুশ। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন সাবেক ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামা ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন। ট্রাম্প না থাকলেও বাইডেনের অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স।
শপথ নেওয়ার পর প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম ভাষণে বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। বাইডেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে বিভক্তিকে ছাপিয়ে সব সময় ঐক্যের জয় হয়েছে। এ ছাড়া বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের সব মানুষের প্রেসিডেন্ট হওয়ার আশা ব্যক্ত করেন। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে শক্তিশালী যুক্তরাষ্ট্র গড়ে তুলতে চান বলেও অঙ্গীকার করেন।
এদিকে নতুন প্রেসিডেন্টকে বরণ করে নিতে প্রস্তুত ছিল ক্যাপিটল হিল। অন্যবারের চেয়ে এবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল আরো কঠোর। মোতায়েন ছিল ২৫ হাজার সেনা। ওয়াশিংটন শহরের বেশিরভাগ অংশেই চলাচল আটকে দেওয়া হয়। শপথ অনুষ্ঠানে গণজমায়েত এড়াতে এবার জনগণকে বাড়িতে বসেই ভার্চুয়ালি বাইডেনের অভিষেক অনুষ্ঠান দেখার অনুরোধ জানানো হয়।
এদিকে, শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার আগে বুধবার সকালে ওয়াশিংটন ডিসির সেন্ট ম্যাথিউ গির্জায় হাজির হয় বাইডেনের গাড়িবহর। নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী জিল বাইডেন। ক্যাথিড্রালে বাইডেনের পরিবারের অন্য সদস্যরা, নবনির্বাচিত ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস তাঁর পরিবারসহ প্রার্থনায় যোগ দেন।
মহামারির সময়ে হলেও এবার বাইডেনের শপথ অনুষ্ঠানে জাতীয় সংগীত গান লেডি গাগা। মঞ্চ মাতান জেনিফার লোপেজসহ একাধিক তারকা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন দুইবার অস্কারজয়ী হলিউড অভিনেতা টম হ্যাংকস।
দায়িত্ব নেওয়ার প্রথমদিনই অন্তত ১৭টি অধ্যাদেশে সই করবেন বাইডেন। এরমধ্যে নতুন অভিবাসন নীতি, প্যারিস জলবায়ু চুক্তি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় পুনরায় যোগ দেওয়ার বিষয়গুলো থাকছে।
এদিকে শপথের আগে ওয়াশিংটন ডিসিতে পৌঁছে বিশেষ এই দিনটি উপলক্ষে একটি টুইট করেন বাইডেন। টুইটারে বাইডেন লেখেন, ‘আমেরিকায় এটি একটি নতুন দিন।’
এ ছাড়া শপথ নেওয়ার আগে বাইডেনকে অভিনন্দন জানান সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। এক টুইট বার্তায় ওবামা লেখেন, ‘অভিনন্দন আমার বন্ধু প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে। এখন সময় আপনার।’
এদিকে, বিদায়ী বক্তব্যে ডোনাল্ড ট্রাম্পও বাইডেন প্রশাসনের সফলতা কামনা করেছেন। ট্রাম্প আগেই জানিয়েছিলেন, তিনি জো বাইডেনের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন না। তবে হোয়াইট হাউসের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, বাইডেনকে লেখা একটি চিঠি রেখে গেছেন ট্রাম্প।