মুম্বাইসহ ভারতের মহারাষ্ট্র ও গুজরাট উপকূলে আঘাত হানতে শুরু করেছে ঘূর্ণিঝড় নিসর্গ। উপকূলের দিকে ধেয়ে আসার সময় ঘূর্ণিঝড়টি আরও শক্তি সঞ্চয় করে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে বলে ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে।
আলিবাগে আছড়ে পড়ার পর এগোচ্ছে সেই ঘূর্ণীঝড়। মুম্বই থেকে মাত্র ৮০ কিলোমিটার দূরে। এ সময় ঘণ্টায় একটানা ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে, যা ঝড়ো ও দমকা হওয়া আকারে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত উঠতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে তাণ্ডব।
১ টার আগেই ব্যাপক হাওয়ার দাপটে উপড়ে গিয়েছে বহু গাছ। ১ টা্র কিছু পরেই মহারাষ্ট্রের রায়গড় জেলায় ঝড়ের মুখ প্রবেশ করেছে। মুম্বইতে চলছে ব্যাপক হাওয়া সঙ্গী বৃষ্টি।
আলিবাগের দক্ষিণ দিক দিয়ে এটি যাবে বলে জানাচ্ছেন আবহাওয়াবিদরা। গতি হবে সর্বোচ্চ ১২০ কিলোমিটার। এটি লেভেল ২এর ঘূর্ণিঝড় বলে জানাচ্ছে হাওয়া অফিস। আশঙ্কার কথা মাথায় রেখে প্রকাশ্যে মানুষের চলাচলে বিধিনিষেধ জারি করেছে মুম্বই। মুম্বই উপকূলের তীরবর্তী সমুদ্র সৈকত, পার্ক এরকম খোলা জায়গায় বেরোনোর ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। গুজরাত, দমন-দিউ, দাদরা নগর হাভেলি এই সমস্ত জায়গায় ঝড়ের কারণে হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।
Read More News
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় মহারাষ্ট্র ও গুজরাটজুড়ে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। রাজ্য দুটির উপকূলীয় এলাকাগুলো থেকে এক লাখেরও বেশি মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। মুম্বাই শহরের উপকূলীয় এলাকাগুলো থেকে কয়েক হাজার লোককে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে অস্থায়ীভাবে নির্মিত একটি কোভিড-১৯ হাসপাতালের দেড়শজন রোগীও রয়েছেন বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ উপকূলে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তাণ্ডবের পর দুই সপ্তাহ না পেরোতেই গত শনিবার দক্ষিণ-পূর্ব আরব সাগরে লাক্ষাদ্বীপের কাছাকাছি একটি নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়৷ পরে তা নিম্নচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হলে নাম দেওয়া হয় নিসর্গ।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে মুম্বাইসহ মহারাষ্ট্র উপকূলজুড়ে জলোচ্ছ্বাস ও আকস্মিক বন্যা দেখা দিতে পারে। গত একশ বছরের বেশি সময়ের মধ্যে এই প্রথম মুম্বাই একটি ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়তে যাচ্ছে। মুম্বাইয়ের পাশাপাশি থানে, পলঘর ও রাইগাডেও রেড অ্যালার্ট জারি করেছে দেশটির আবহাওয়া বিভাগ।
মুম্বই শেষ ঘূর্ণিঝড় দেখেছিল ১৮৮২ সালে। এরপর থেকে সন্তানের মতই বাণিজ্যনগরীকে আগলে রেখেছে আরবসাগর। সাইক্লোন শক্তি দেখাতেই পারেনি ৷ আরব সাগরের বাতাস সাইক্লোনের মুখ ঘুরিয়ে দেয় ৷ ঘূর্ণিঝড় তৈরি হলে তা ওমান বা এডেন উপসাগরের দিকে ঘুরে যায় ৷ অনেক সময় গুজরাতের দিকেও চলে যায় ঘূর্ণিঝড় ৷